ইসলামে বিবাহ - শাদী অনেক সহজ আর প্রচলিত
সমাজ ব্যবস্থা বা সামাজিকতা বিবাহ - শাদীকে আজ
কঠিন
করে ফেলেছে যার ফলে বিয়ে করতে বিলম্ব
হওয়ায় যুবসমাজ নানা প্রকার সামাজিক অন্য ায় ও ব্যভিচারে লিপ্ত ।
সমাজ ব্যবস্থা বা সামাজিকতা বিবাহ - শাদীকে আজ
কঠিন
করে ফেলেছে যার ফলে বিয়ে করতে বিলম্ব
হওয়ায় যুবসমাজ নানা প্রকার সামাজিক অন্য ায় ও ব্যভিচারে লিপ্ত ।
আজকাল দেখা যায় , বিয়ের দেনমোহর ধার্য
করতে গিয়ে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে দর
কষাকষি শুরু হয় এমনকি বিয়ে পর্যন্ত ভেঙ্গে যায় ।
আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় , বরের
সামর্থ্যের বাইরে দেনমোহর ধার্য করা হয় যা কিনা
বরের উপর এক প্রকার জুলুম । অথচ হাদীস
থেকে আমরা জানতে পারি যে , রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময় বিবাহ - শাদী অনেক সহজ
ছিল ।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা ' আলা বলেন ,
হে মানব , আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক
নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে
বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি , যাতে
তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও । নিশ্চয় আল্লাহর কাছে
সে - ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার ।
নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ , সবকিছুর খবর রাখেন । [ সূরা
আল - হুজুরাতঃ ১৩ ]
মুমিনদেরকে বলুন , তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত
রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে ।
এতে তাদেরজন্য খুব পবিত্রতা আছে । নিশ্চয় তারা যা
করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন । [ সূরা আন - নুরঃ৩০ ]
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন , তারা যেন তাদের
দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের
হেফাযত করে । তারাযেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান , তা
ছাড়া তাদেরসৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা
যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে
রাখে এবংতারা যেন তাদের স্বামী , পিতা , শ্বশুর ,
পুত্র , স্বামীর পুত্র , ভ্রাতা , ভ্রাতুস্পুত্র , ভগ্নিপুত্র ,
স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী , যৌনকামনামুক্ত
পুরুষ , ও বালক , যারা নারীদের গোপন অঙ্গ
সম্পর্কে অজ্ঞ , তাদের ব্যতীত কারো আছে
তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে , তারা যেন
তাদের গোপন সাজ - সজ্জা প্রকাশ করার জন্য
জোরেপদচারণা না করে । মুমিনগণ , তোমরা
সবাইআল্লাহর সামনে তওবা কর , যাতে
তোমরাসফলকাম হও । [ সূরা আন - নুরঃ ৩১ ]
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না । নিশ্চয় এটা
অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ । [ সূরাবনী - ইসরাইলঃ ৩২ ]
নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না , প্রকাশ্য হোক কিংবা
অপ্রকাশ্য [ সূরা আল আন ' আমঃ ১৫১ ]
যারা চায় যে , মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার
ঘটুক তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি । আর আল্লাহ জানেন , তোমরা
জান না । [ সূরাআন - নুরঃ ১৯ ]
ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্
তা ' আলা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ -
আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের
সহায়ক । তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে
বিরত রাখে । নামায প্রতিষ্ঠা করে , যাকাত দেয় এবং
আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন
যাপন করে । এদেরই উপর আল্লাহ তা ' আলা দয়া
করবেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল ,
সুকৌশলী । [ সূরা আত - তউবাঃ ৭১ ]
নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ , মুসলমান নারী , ঈমানদার পুরুষ ,
ঈমানদার নারী , অনুগত পুরুষ , অনুগত নারী ,
সত্যবাদী পুরুষ , সত্যবাদী নারী , ধৈর্য্যশীল
পুরুষ , ধৈর্য্যশীল নারী , বিনীত পুরুষ , বিনীত
নারী , দানশীল পুরুষ , দানশীল নারী , রোযা
পালণকারী পুরুষ , রোযা পালনকারী নারী ,
যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ , , যৌনাঙ্গ
হেফাযতকারী নারী , আল্লাহর অধিক যিকরকারী
পুরুষ ও যিকরকারী নারী - তাদের জন্য আল্লাহ
প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার । [ সূরা
আল - আহযাবঃ ৩৫ ]
বিবাহ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্তা ' আলা
বলেন ,
তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন , তাদের বিবাহ
সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের
মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন , তাদেরও । তারা যদি নিঃস্ব
হয় ,
তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল
করে দেবেন । আল্লাহ প্রাচুর্যময় , সর্বজ্ঞ । যারা
বিবাহে সামর্থ নয় , তারা যেন সংযম অবলম্বন করে
যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে
অভাবমুক্ত করে দেন । [ সূরা আন - নুরঃ ৩২ - ৩৩ ]
দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে
এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের
জন্যে । সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের
জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা
নারীকুলের জন্যে । তাদের সম্পর্কে লোকে
যা বলে , তার সাথে তারা সম্পর্কহীন । তাদের
জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা ।
[ সূরাআন - নুরঃ ২৬ ]
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে
করোনা , যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে । অবশ্য
মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা
উত্তম , যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো
লাগে । এবং তোমরা ( নারীরা ) কোন মুশরেকের
সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না , যে পর্যন্ত
সে ঈমান না আনে । একজন মুসলমান ক্রীতদাসও
একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল , যদিও
তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও । তারা
দোযখের দিকে আহ্বান করে , আর আল্লাহ
নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও
ক্ষমার দিকে । আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ
বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে । [ সূরা
আল - বাকারাঃ ২২১ ]
আর তোমার কাছেজিজ্ঞেস করে হায়েয ( ঋতু )
সম্পর্কে । বলে দাও , এটা অশুচি । কাজেই তোমরা
হায়েয অবস্থায়স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক ।
তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না , যতক্ষণ
না তারা পবিত্রহয়ে যায় । যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ
হয়ে যাবে , তখন গমন কর তাদের কাছে ,
যেভাবে আল্লাহতোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন ।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে
যারা বেঁচেথাকে তাদেরকে পছন্দ করেন । [ সূরা
আল - বাকারাঃ ২২২ ]
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য
ক্ষেত্র । তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে
ব্যবহার কর । আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের
ব্যবস্থা করএবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক । আর
নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে , আল্লাহর সাথে
তোমাদেরকে সাক্ষাতকরতেই হবে । আর যারা
ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও । [ সূরা
আল - বাকারাঃ ২২৩ ]
বিবাহ সম্পর্কিত সহীহ বুখারী শরীফের
গুরুত্বপূর্ণকিছু হাদিসঃ -
সাঈদ ইবনে আবু মারয়াম ( র ) ... সাহল ( রা ) থেকে
বর্ণিত যে , একজন মহিলা এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিজেকে পেশ
করলেন । এক ব্যক্তি বলল , ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তাকে
আমার সঙ্গে শাদী বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দেন ।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ,
তোমার কাছে কি আছে ? সে উত্তর দিল , আমার
কাছে কিছুই নেই । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন , যাও , তালাশ কর , কোন কিছু পাও কিনা ?
যদিও একটি লোহার আংটিও ( তা নিয়ে এসো ) । লোকটি
চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল , একটি কিছুই
পেলাম না এমনকি লোহার আংটিও না ; কিন্তু আমার এ
তহবন্দখানা আছে । এর অর্ধেকাংশ তার জন্য । সাহল
( রা ) বলেন , তার দেহে কোন চাদর ছিল না । অতএব
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ,
তোমার তহবন্দ দিয়ে কি করবে ? যদি তুমি এটা
পরিধান কর , মহিলার শরীরে কিছুই থাকবে না , আর
যদি সে এটা পরিধান করে তবে তোমার শরীরে
কিছুই থাকবে না । এরপর লোকটি অনেকক্ষণ
বসে রইল । এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে চলে যেতে দেখে ডাকলেন
বা ডাকানো হল এবং বললেন , তুমি কুরআন কতটুকু
জান ? সে বলল , আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে
এবং সে সূরাগুলোর উল্লেখ করল । তখন নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , তুমি যে
পরিমান কুরআন জান , তার বিনিময়ে তোমাকে এর সাথে
শাদী দিলাম । [ সহীহ বুখারী , হাদিস নং - ৪৭৪৬
0 comments:
Post a Comment