বিবাহ মহান আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামত

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [সূরা আল-হুজুরাতঃ ১৩]

ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ-

আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা'আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। [সূরা আত-তউবাঃ ৭১]

রাসুল (সাঃ) দ্রুত বিবাহের জন্য উৎসাহ দিয়ে বললেন:

হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে নেয়। (বুখারী-৫০৬৫)

জীবনসঙ্গী পছন্দ করার বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

“চারটি বিষয়কে সামনে রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয় — তার ধন সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার ধর্মপরায়নতা। এক্ষেত্রে ধর্মপরায়ন স্ত্রী লাভে বিজয়ী হও, তোমার হাত কল্যাণে ভরে যাবে।” [বুখারী ও মুসলিম]

মহানবী (স:)একদিন যুবকদের লক্ষ্য করে বলেন:

যুবকদের লক্ষ্য করে বললেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে বিয়ের যোগ্যতা রাখে না, তার উচিত রোজা পালন করা। (বোখারি ও মুসলিম)

Friday, January 29, 2016

দেনমোহর পরিশোধ না করে কি স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারব?

প্রশ্ন:
আমি বিবাহের সময় স্ত্রীর মহর বাবদ ধার্য টাকা কিছু পরিশোধ করি এবং অবশিষ্ট টাকা পরে দেব বলে ওয়াদা দেই। আমার জানার বিষয় হল, আমি কি এখন আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারব?

উত্তর:
হ্যাঁ, পারবেন। মহরের টাকা বাকি থাকলে স্বামী স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারে না-এ ধারণা ভুল। তবে নগদ আদায়যোগ্য মহর পরিশোধ করা না হলে, স্ত্রী শুরু থেকেই স্বামীকে নিজের নিকট আসা থেকে বারণ করতে পারে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নগদ মহর তো আপনি দিয়েই দিয়েছেন। সুতরাং স্পর্শ না করার বিষয়টি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১১৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৭৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩১৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১১৩

Friday, January 22, 2016

অজান্তেই আমরা বিয়েতে যে ৭টি নাজায়েজ কাজ করে থাকি

মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের উপর বিয়ের বিষয়ে কড়া নির্দেষনা দিয়েছেন তাই প্রতিটি মুসলমানের কাছেই বিয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্যদিকে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে বাক্তি বিয়ে করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়
মহানবী (সা.) এর এই বাণী থেকেই বোঝা যায় বিয়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ তবে বর্তমান যুগে মুসলমানদের বিয়েতে এখনও অন্তত ৭টি ইসলাম বিরোধী প্রথা চালু রয়েছে যা প্রতিটি মুসলমানদের উচিত উল্লেখিত এই ৭টি না জায়েজ কাজ ত্যাগ করা

প্রচলিত কু-প্রথাগুলো হলো-
চন্দ্র বর্ষের কোন মাসে বা কোন দিনে অথবা বর/কনের জন্ম তারিখে বা তাদের পূর্ব পুরুষের মৃত্যুর তারিখে বিয়ে-শাদী হওয়া অথবা যেকোনো শুভ সৎ কাজ করার জন্য ইসলামী শারীয়াতে বা ইসলামী দিন তারিখের কোন বিধি নিষেধ নেয় বরং উপরিউক্ত কাজগুলো বিশেষ কোন মাসে বা যে কোন দিনে করা যাবে না মনে করাই গুনাহ

বিয়ে উৎসবে অথবা অন্য যেকোনো উৎসবে পটকা-আতশবাজি ফুটান, অতিরিক্ত আলোকসজ্জা করা, রংবাজী করা বা রঙ দেয়ার ছড়াছড়ি ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ অপচয়
আল্লাহু-তায়ালা বলেনঃনিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ

বাঁশের কুলায় চন্দন, মেহদি, হলুদ, কিছু ধান-দুর্বা ঘাস কিছু কলা, সিঁদুর মাটির চাটি নেয়া হয় মাটির চাটিতে তেল নিয়ে আগুন জ্বালানো হয় স্ত্রী বরের কপালে তিনবার হলুদ লাগায় এমনকি মূর্তিপূজার ন্যায় কুলাতে রাখা আগুন জ্বালানো চাটি বর-কনের মুখের সামনে ধরা হয় আগুনের ধোঁয়া কুলা হেলিয়ে-দুলিয়ে বাতাস দেয়া হয় এসব হিন্দুয়ানী প্রথা অনৈসলামিক কাজ

বরের আত্মীয়রা কনেকে কোলে তুলে বাসর ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া অথবা বরের কোলে করে মুরুব্বীদের সামনে স্ত্রীর বাসরঘরে গমনের নীতি একটি বেহায়াপনা, নিরলজ্জতা অনৈসলামিক কাজ

বরের ভাবী অন্য যুবতী মেয়েরা বরকে সমস্ত শরীরে হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে দেয়া নির্লজ্জ কাজ, যা ইসলাম সমর্থন করে না পাশাপাশি বর কনেকে হলুদ বা গোসল করতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাথার ওপর বড় চাদর এর চার কোনা চার জনের ধরা হিন্দুয়ানী প্রথা

বর কনের মুরুব্বীদের কদমবুসি করা একটি মারাত্মক কু-প্রথা বিয়ে তো নয় এমনকি যেকোনো সময় পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা কোন কালে প্রমাণিত নয় কদমবুচি করার সময় সালাতের রুকু-সিজদার মত অবস্থা হয় বেশি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে হিন্দুয়ানী প্রনামকে প্রথা হিসেবে নিয়ে আসা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য নয়

তাছাড়া বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বরকে পিঁড়িতে বসিয়ে বা সিল-পাটাই দাঁড় করিয়ে দই-ভাত খাওয়ান ইসলামিক প্রথা নয় পাশাপাশি বিযের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বরকে দাঁড় করিয়ে সালাম দেয়ানোর প্রথা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা প্রমাণিত নয়


পরিশেষে বলতে হয়, মুসলমানরা যদি ভয়ঙ্কর এই ৭টি নাজায়েজ কাজ পরিত্যাগ না করে, তাহলে কাল কিয়ামতের ময়দানে তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে তাই দ্রুতই যেন আমরা সবাই সকল নাজায়েজ কাজ ত্যাগ করে দীনের পথে ফিরে আসি(সংগৃহীত)