বিবাহ মহান আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামত

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [সূরা আল-হুজুরাতঃ ১৩]

ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ-

আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা'আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। [সূরা আত-তউবাঃ ৭১]

রাসুল (সাঃ) দ্রুত বিবাহের জন্য উৎসাহ দিয়ে বললেন:

হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে নেয়। (বুখারী-৫০৬৫)

জীবনসঙ্গী পছন্দ করার বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

“চারটি বিষয়কে সামনে রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয় — তার ধন সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার ধর্মপরায়নতা। এক্ষেত্রে ধর্মপরায়ন স্ত্রী লাভে বিজয়ী হও, তোমার হাত কল্যাণে ভরে যাবে।” [বুখারী ও মুসলিম]

মহানবী (স:)একদিন যুবকদের লক্ষ্য করে বলেন:

যুবকদের লক্ষ্য করে বললেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে বিয়ের যোগ্যতা রাখে না, তার উচিত রোজা পালন করা। (বোখারি ও মুসলিম)

Friday, November 20, 2015

`তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে স্ত্রীদের কাছে উত্তম`

`তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে স্ত্রীদের কাছে উত্তম`
মাহফুজ আবেদ

বিয়ে হচ্ছে এমন একটি সম্পর্ক- যা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পারস্পরিক অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কারণে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের এটা অবশ্য কর্তব্য যে, তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ জীবনযাপন করবে এবং কোনো প্রকার মানসিক অসন্তুষ্টি ও দ্বিধা বাতিরেকেই তাদের যা কিছু আছে একে অন্যের জন্য অকাতরে ব্যয় করবে!
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেছেন,
আর তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে উত্তম ব্যবহার কর।’ -সূরা আন নিসা: ১৯

তাইতো স্ত্রীর কাছে উত্তম ব্যক্তিকে ইসলাম উত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করেছে। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে,
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত নবী করিম (সা.) বলেন,
'মোমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ মোমিন ওই ব্যক্তি, যার ব্যবহার ও চরিত্র সর্বাপেক্ষা উত্তম। আর তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে স্ত্রীদের কাছে উত্তম।’ -তিরমিজি

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে বিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পক্ষ থেকে জারিকৃত একটি সুন্নত বিশেষ। তবে শর্ত হলো, বিয়েকারীর সামর্থ্য থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে কতগুলো অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়িত করা উভয়ের প্রতি অপরিহার্য কর্তব্য।

হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
'হে যুবক সম্প্রদায় তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কেননা তা চক্ষুকে নিম্নগামী রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। আর যে সামর্থ্য রাখে না সে যেন রোজা রাখে। রোজা হলো খোজা হওয়ার শামিল।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন,
'সাবধান! তোমাদের প্রতি তোমাদের স্ত্রীদের যেমন অধিকার রয়েছে এবং তোমাদেরও স্ত্রীদের প্রতি তদ্রূপ অধিকার রয়েছে। তারা যেন তোমাদের শয্যাস্থানে এমন লোককে স্থান না দেয় যাদের তোমরা অপছন্দ করো এবং তারা যেন তোমাদের ঘরে এমন লোককে প্রবেশের অনুমতি না দেয়, যাদের তোমরা প্রবেশ করতে অপছন্দ করো।'

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,
হজরত রাসূলে পাক (সা.) বলেন,
'কারও যদি দুইজন স্ত্রী থাকে এবং সে উভয়ের সঙ্গে ন্যায়বিচার না করে, তাহলে কেয়ামতের দিন সে বিকলাঙ্গ অবস্থায় হাজির হবে।' –তিরমিজি

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত,
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন,
'নারী যদি যথারীতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানের রোজা পালন করে, তার লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, সে বেহেশতের যে কোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।'

মহান আল্লাহতায়ালা সবাইকে স্বামী-স্ত্রীর অধিকারগুলো সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দান করুন। আমিন।

Sunday, November 15, 2015

এই কথা তুমি আর একবার বললে তুমি তালাক।

প্রশ্ন:
আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার সময় বলে,আমাকে ছেড়ে দাও। এ কথাটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আবদুল্লাহ একবার রাগের মাথায় বলে ফেলে যে,এই কথা তুমি আর একবার বললে তুমি তালাক। এখন জানার বিষয় হল,

ক) স্ত্রী যদি আবার রাগের মাথায় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কথাটি বলে তবে তার কী হুকুম? তালাক হলে কয় তালাক হবে এবং সেক্ষেত্রে তারা একত্রিত হতে চাইলে কী করণীয়?
খ) স্বামীর জন্য তার উক্ত কথা থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় আছে কি?
দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর:
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আবদুল্লাহ ঐ কথা বলার পর তার স্ত্রী যদি পরবর্তীতে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঐ কথা বলে তবে তার উপর এক তালাক রজয়ী পতিত হয়ে যাবে। এরপর ইদ্দতের ভেতরেই আবদুল্লাহ যদি তাকে আবার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নেয় তবে সে তার স্ত্রী হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দতের ভেতরে যদি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ না করে বা স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণও না হয় তবে তালাকটি বায়েন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে উভয়ে একত্রিত হতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করত পুনরায় বিবাহ করতে হবে।

এভাবে এক তালাক হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে আবদুল্লাহ দুই তালাকের অধিকারী থাকবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি আবারও ঐ কথা বলে তাহলে পূর্বের শর্তের কারণে পুনরায় তালাক হবে না। আরো উল্লেখ্য যে, আবদুল্লাহর ঐ শর্ত একবার কার্যকর হওয়ার আগে তা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। তাই তালাক থেকে বাঁচতে চাইলে স্ত্রীকে উক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০, ১/৪১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/৮,৪/১৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৫৫

Saturday, November 14, 2015

দেনমোহরের পরিমাণ



★শরীয়ত দেনমোহরের সর্বোচ্চ কোন পরিমাণ নির্ধারণ করেনি।

তবে সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্ধারণ করেছে,তা হলো- 

         দশ দিরহাম বা দুই তোলা সাড়ে সাত মাসা রুপা বা ৩০.৬১৬ গ্রাম রুপা বা ২.৬২৫ ভরি রুপা।

এরচেয়ে কম দেনমোহরে কনে রাজী হলেও তা শরীয়তে সিদ্ধ হবে না।

Thursday, November 12, 2015

এটি হাদীসের পাঠ নয় : স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত


এটি হাদীসের পাঠ নয় : স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক বা স্বামীর আনুগত্য বিষয়ে অনেকে উপরের কথাকে হাদীস হিসেবে পেশ করে থাকে যার আরবী হল, الجنة تحت أقدام الأزواج । কিন্তু শব্দ-বাক্যে কোনো হাদীস পাওয়া যায় না
সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা যাবে না তবে কিছু বর্ণনায় এর মর্মার্থ পাওয়া যায়
মুআত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকেমসহ হাদীসের আরো কিছু কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-
একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে
নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি
তখন নবীজী বললেন, হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম
মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, /৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬
স্বামী-স্ত্রীর একের উপর অন্যের হক রয়েছে বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে মৌলিক নির্দেশনা দিয়েছেন। 
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ.
আর স্বামীদের যেমন তাদের (স্ত্রীদের) উপর ন্যায়সঙ্গত হক রয়েছে, তেমনি তাদেরও হক রয়েছে স্বামীদের উপর সূরা বাকারা () : ২২৯
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিতভাবে স্বামী-স্ত্রীর হক তুলে ধরেছেন এবং স্বামীদেরকে স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন
বিদায় হজ্বের ভাষণে নবীজী বলেছেন,
اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ.
তোমরা নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২১৮
সাথে সাথে নারীদেরকে স্বামীর আনুগত্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং এর ফযীলতও বর্ণনা করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে, আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪১৬৩

সুতরাং গুনাহের কাজ নয় এমন বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য জরুরি কিন্তু স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশতএটি হাদীস নয়

Friday, November 6, 2015

বকরের জন্য তার দেওয়া মহর তালাকের বিনিময়ে ফেরত নেওয়া বৈধ হবে কি?

প্রশ্ন:
আমার প্রতিবেশী বকর তার স্ত্রীর প্রতি জুলুমের আচরণ করে। স্ত্রী অতিষ্ঠ হয়ে তার কাছে তালাক চায়। কিন্তু বকর শর্ত দিয়েছে যে,তালাক দিলে তাকে তার দেওয়া মহর ফেরত দিতে হবে। এতে স্ত্রী সম্মত হলে বকর তাকে সে মহরের বিনিময়ে এক তালাক দিয়ে দেয়। প্রশ্ন হল, উক্ত অবস্থায় বকরের জন্য তার দেওয়া মহর তালাকের বিনিময়ে ফেরত নেওয়া বৈধ হবে কি?

উত্তর:
প্রশ্নের বক্তব্য অনুযায়ী বাস্তবেই বকরের জুলুমের কারণে যদি তার স্ত্রী তালাক নিতে বাধ্য হয়ে থাকে তবে বকরের জন্য এ স্ত্রী থেকে তালাকের কারণে মহর ফেরত নেওয়া বা অন্য কিছু নেওয়া বৈধ হবে না।
কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার ১৯ ও ২০ নং আয়াতে এ ধরনের ক্ষেত্রে স্ত্রী থেকে সম্পদ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
আমর বিন দীনার রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে অসদাচরণ করে তাহলে স্ত্রী কোনো কিছুর বিনিময়ে তালাক চাইলেও স্বামীর জন্য তা নেওয়া বৈধ হবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,হাদীস : ১১৮২২
ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বামীর জন্য তার স্ত্রী থেকে তালাকের বিনিময়ে কোনো কিছু নেওয়া তখনি বৈধ হবে যখন স্ত্রীর অবাধ্যতার কারণেই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে থাকে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১১৮১৫
অনুরূপ বক্তব্য হযরত উরওয়া, আতা, আমর বিন শুআইব প্রমুখ তাবেয়ী থেকেও বর্ণিত আছে।
(দেখুন : মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৮৭৩৭-১৮৭৪২) -বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮৮; আহকামুল কুরআন, থানবী ১/৪৮৮

জারজ সন্তান কি মিরাসের অধিকার লাভ করবে?

প্রশ্ন:
জনৈক ব্যক্তি এক অবিবাহিতা নারীর সাথে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় ফলে একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয়। বিষয়টি এলাকার অনেক মানুষই জানে। সেই ব্যক্তি মারা গেলে তার অবৈধ সন্তান উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তির দাবি করে। তখন মৃতের বৈধ ছেলে-মেয়ে ও অন্যান্য ওয়ারিসগণ তাকে সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এর সমাধান কী? জারজ সন্তান কি এক্ষেত্রে মিরাসের অধিকার লাভ করবে? আশা করি উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর:
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারের দাবিদার উক্ত সন্তান ঐ ব্যভিচারী থেকে মিরাস পাবে না। তার বংশসূত্র তার মা থেকে প্রমাণিত হবে এবং সে তার থেকে মিরাস পাবে। 
হাদীস শরীফে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন নারী অথবা বাদীর সথে ব্যভিচারে লিপ্ত হল (এবং তাতে সন্তান জন্ম নিল) তাহলে সেটা জারজ সন্তান। সে ব্যভিচারী থেকে মিরাস পাবে না, ব্যভিচারীও তার থেকে মিরাস পাবে না। -জামে তিরমিযী,হাদীস : ২১১৩
সুতরাং এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির মিরাসের দাবি গ্রহণযোগ্য হবে না।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩২০৬৫; ইলাউস সুনান ৮/৭৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/৫০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪৯১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/৩৪৭

Thursday, November 5, 2015

নেককার নারীর কিছু গুণ


নেককার নারীর কিছু গুণ

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) পুরুষ নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এ কারণে যে, পুরুষগণ নিজেদের অর্থসম্পদ ব্যয় করে। সুতরাং সাধ্বী স্ত্রীগণ অনুগত হয়ে থাকে। পুরুষের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হিফাজতে (তার অধিকারসমূহ) হেফাযত করে। -সূরা নিসা : ৩৪
উক্ত আয়াতের ভিত্তিতে কুরআনের অন্যান্য আয়াত ও হাদীসের আলোকে সংক্ষেপে নেককার স্ত্রীর কিছু গুণাবলি পেশ করছি।

প্রথম গুণ :
উক্ত আয়াতে নেককার নারীর প্রথম গুণ বলা হয়েছে, সতী-সাধ্বী ও দ্বীনদার হওয়া। সালিহাত শব্দের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. বলেছেন, দ্বীনের সঠিক অনুসারিনী, সৎকর্মশীল নারীগণ।

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পার্থিব জগতটাই হল ক্ষণিক উপভোগের বস্ত্ত। আর পার্থিব জগতের সর্বোত্তম সম্পদ (উপভোগের বস্ত্ত) সাধ্বী নারী। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৬৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৫৬৭; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪০৩১

হযরত আবু উমামা রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মুমিনের জন্য আল্লাহর তাকওয়া অর্জনের পর নেককার স্ত্রীর চেয়ে কল্যাণকর কিছু নেই। কারণ স্বামী তাকে আদেশ করলে সে আনুগত্য করে, তার দিকে দৃষ্টিপাত করলে সে (স্বামী) মুগ্ধ হয়। তাকে নিয়ে শপথ করলে সে তা (শপথকৃত কর্ম) পূরণ করে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে (অন্যায়-অপকর্ম থেকে) এবং স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫৭

হযরত সাওবান রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সোনা-রূপা সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কোন ধরনের মাল সঞ্চয় করব? তিনি বললেন, তোমাদের প্রত্যেকেই যেন সঞ্চয় করে কৃতজ্ঞ অন্তর, যিকিরকারী মুখ এবং পরকালীন কর্মকান্ডে সহায়তাকারিনী মুমিনা নারী। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩১০১; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩০৯৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫৬

দ্বিতীয় গুণ :
স্বামীর অনুগত ও বিশ্বস্ত হওয়াকে উক্ত আয়াতে নেককার নারীর দ্বিতীয় গুণ বলা হয়েছে।
কানিতাত শব্দের ব্যাখ্যায় হযরত কাতাদাহ রাহ. বলেন, আল্লাহ তাআলা ও স্বামীর অনুগত নারীগণ। এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবে, রমযান মাসের রোযা রাখবে, নিজ লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে তখন তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ কর। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৬৬১; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪১৬৩

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, নারীদের মধ্যে কোন নারী উত্তম। তিনি বললেন, স্বামী যাকে দেখলে আনন্দবোধ করে, যাকে আদেশ করলে আনুগত্য করে, স্ত্রীর বিষয়ে এবং সম্পদের ব্যাপারে স্বামী যা অপছন্দ করে তা থেকে বিরত থাকে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭৪২১; সুনানে নাসায়ী, কুবরা, হাদীস : ৮৯৬১

তৃতীয় গুণ :
উক্ত আয়াতে নেককার নারীর তৃতীয় গুণ বলা হয়েছে, স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার ধন-সম্পদ হেফাযত করবে এবং নিজের সতীত্বের হেফাযত করবে।

আয়াতের এই অংশের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. বলেন, নারীগণ তাদের স্বামীর অবর্তমানে নিজেদের লজ্জাস্থান হেফাযত করবে এবং এক্ষেত্রে কোনো ধরনের খেয়ানত করবে না। স্বামীর ধন-সম্পদ সংরক্ষণ করবে। তাদের উপর এ দায়িত্ব আল্লাহর পক্ষ থেকেই আরোপিত।
এ সম্পর্কিত হাদীস শরীফের বর্ণনা পূর্বোক্ত হাদীসসমূহে উল্লেখ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস উল্লেখ করছি।

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উত্তম স্ত্রী সে, যার প্রতি দৃষ্টিপাত করলে তোমাকে আনন্দিত করে, আদেশ করলে আনুগত্য করে, তুমি দূরে থাকলে তার নিজের ব্যাপারে এবং তোমার সম্পদের ব্যাপারে তোমার অধিকার রক্ষা করে। তারপর তিনি কুরআনের উক্ত আয়াত (পুরুষ নারীদের অভিভাবক) তেলাওয়াত করেন। -তাফসীরে তবারী, হাদীস : ৯৩২৯; মুসনাদে ত্বয়ালিসী, হাদীস : ২৩২৫

চতুর্থ গুণ :
পবিত্র ও চরিত্রবান হওয়া। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, (তরজমা) পবিত্র নারীগন পবিত্র পুরুষদের উপযুক্ত এবং পবিত্র পুরুষগণ পবিত্র নারীদের উপযুক্ত।

এখানে মুমিন নর-নারীর জন্য মূলনীতি বলে দেওয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা মানবচরিত্রে স্বাভাবিকভাবে পরস্পরের মাঝে যোগসূত্র রেখেছেন। পবিত্র ও চরিত্রবান নারীদের আগ্রহ পবিত্র ও চরিত্রবান পুরুষদের প্রতি হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে পবিত্র ও চরিত্রবান পুরুষদের আগ্রহ পবিত্র ও চরিত্রবান নারীদের প্রতি হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেকেই নিজ নিজ আগ্রহ অনুযায়ী জীবনসঙ্গী খোঁজ করে নেয় এবং প্রাকৃতিক বিধান অনুযায়ী সেটাই বাস্তবরূপ লাভ করে। এ জন্য জীবনসঙ্গী ও সঙ্গিনী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসলাম দ্বীনদারিকে প্রাধান্য দিতে জোর তাকিদ দিয়েছে।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তিন গুণের যেকোনো একটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয় : ধন-সম্পদের কারণে, রূপ-সৌন্দর্যের কারণে ও দ্বীনদারির কারণে। তুমি দ্বীনদার ও চরিত্রবানকেই গ্রহণ কর। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৭৪৩৪; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১১৭৬৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪০৩৪

পঞ্চম গুণ :
বিবাহের মাধ্যমে চারিত্রিক পবিত্রতা সম্পন্ন হওয়া, গোপনে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে লিপ্ত না হওয়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চারিত্রিক পবিত্রতাসম্পন্ন হবে, ব্যভিচারিনী হবে না এবং গোপনে কোনো অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনকারিনী হবে না। -সূরা নিসা : ২৫

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত ইবনে আববাস রা. বলেন, চারিত্রিক নিষ্কলুষতার অধিকারিনী নারীগণ, যারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ব্যভিচারিনী হবে না এবং সঙ্গোপনে অবৈধ বন্ধু গ্রহণকারিনী হবে না। তিনি বলেন, জাহেলী যুগে লোকেরা প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে হারাম মনে করত, কিন্তু গোপনে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে হালাল মনে করত। এই প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাযিল করলেন, তোমরা প্রকাশ্যে হোক, অপ্রকাশ্যে হোক কোনো রকম অশ্লীল কাজের নিকটেও যেও না। -সূরা আনআম : ১৫১; তাফসীরে তবারী, হাদীস : ৯০৯৫, ৯০৭৬, ৪/২২

বর্তমান সমাজে অবৈধ সম্পর্কের ব্যাধি মহামারিতে পরিণত হয়েছে। পর্দাহীনতা, সহশিক্ষা এবং অশ্লীল ফিল্ম ও ছবির বদৌলতে একদিকে অবিবাহিত উঠতি নর-নারী তথাকথিত প্রেমের নামে ভয়ঙ্কররূপে প্রকাশ্য অশ্লীলতায় মেতে উঠছে, অন্যদিকে পরকীয়া প্রেমের কারণে ঘর ভাঙছে অসংখ্য নারীর। তাই মুসলমান নর-নারীরা যতক্ষণ আল্লাহর হুকুম ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে না চলবে ততক্ষণ পারিবারিক শান্তি ও দাম্পত্য জীবনের সুখ খুঁজে পাবে না।

ষষ্ঠ গুণ :
দ্বীনদার ও চরিত্রবান হওয়ার সাথে সাথে সরলমতী ও সাদাদিলের অধিকারিনী হওয়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) চরিত্রবান, সরলমতী ঈমানদার নারীগণ। -সূরা নূর : ২৩

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. বলেন, যারা অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অসচেতন (বহু দূরত্বে অবস্থানকারী)।

আল্লামা আলুসী রাহ. বলেন, পবিত্রতার সার্বিক উপাদান নিয়ে বেড়ে উঠা এবং উত্তম চরিত্রের উপর লালিত-পালিত হওয়ার কারণে অন্য কোনো চিন্তা ও মানসিকতা যাদের কল্পনায় আসে না। এই গুণ পূর্ণ নিষ্কলুষতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার প্রমাণ বহন করে, যা শুধু মুহাসানাত (সতী নারী) শব্দের মধ্যে পাওয়া যায় না। -রূহুল মাআনী ৬/১২৬

অন্য কিতাবে বলা হয়েছে, আত্মার ব্যাধিমুক্ত, স্বচ্ছ অন্তরের নারীগণ, যাদের মধ্যে প্রবঞ্চনামূলক চাতুর্য নেই। যাদের স্বভাব-প্রকৃতিতে অসৎ কোনো মনোবাসনা নেই। শৈশবকাল থেকেই এই স্বভাব-সুচরিত্র গড়ে উঠতে সহায়ক হয়। -গারায়েবুল কুরআন ৫/১৭৩

আল্লাহ তাআলা এ ধরনের গুণের অধিকারিনী নারীকে ঈমানদার পরিচয়ে ভূষিত করেছেন।
এই বৈশিষ্ট্যের নারীদের বাইরের জগত সম্পর্কে ধারণা থাকে না, অবৈধ সম্পর্কের কল্পনাও তাদের অন্তরে থাকে না। তারা প্রবঞ্চনা কি জিনিস বুঝেই না। ছল-ছাতুরি জানে না। প্রতারণা ও মিথ্যা বলে না। পর্দাহীনতা ও ফ্যাশন সম্পর্কে চিন্তাও করে না। ফলে তাদের চরিত্র কলুষিত হওয়া ও দ্বীনদারী বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে না।

সপ্তম গুণ :
গৃহে অবস্থান করা। অপ্রয়োজনে বাইরে না যাওয়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করো। (পর পুরুষকে) সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বেড়িও না। যেমন প্রাচীন জাহেলী যুগে প্রদর্শন করা হত। -সূরা আহযাব : ৩৩

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাছীর রাহ. বলেন, তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থানকে অবধারিত করে নাও। প্রয়োজন ব্যতীত ঘর হতে বের হয়ো না।

এ আয়াতে স্পষ্ট করে মূলনীতি বলা হয়েছে যে, নারীর আসল কাজ তার গৃহে অবস্থান। ঘরোয়া কর্তব্য পালন করা এবং খান্দানকে গড়ে তোলাই তার মূল দায়িত্ব। যেসব তৎপরতা এ দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটায় তা নারীজীবনের মৌল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। এবং তা দ্বারা সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর অর্থ এমন নয় যে, ঘর থেকে বের হওয়া তার জন্য একদম জায়েয নয়; বরং প্রয়োজনে সে পর্দার সাথে বাইরে যেতে পারবে। তবে বাইরে গমন ও অবস্থান শুধু প্রয়োজনবশত ও প্রয়োজন পরিমাণ হতে হবে। এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নারীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আগমন করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ও অন্যান্য মর্যাদায় অগ্রগামী হয়েছেন। আমাদের জন্য কি এমন কোনো আমল রয়েছে যার মাধ্যমে মুজাহিদীনের সমপর্যায়ের মর্যাদা ও সওয়াবের অধিকারী হতে পারব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের থেকে যারা নিজ গৃহে অবস্থান করবে সেটাই তাদেরকে মুজাহিদদের ফযীলত ও সওয়াবে উপনীত করবে। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ৬৯৬১; তাফসীরে ইবনে কাছীর ৩/৭৬৮

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নারী হল আবরণীয়। যখন সে বের হয় শয়তান তার অনুসরণ করে। যখন সে ঘরে আবদ্ধ থাকে তখন আল্লাহর রহমত লাভের অতি নিকটবর্তী থাকে। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ২০৬১